স্বাস্থ্যসচেতন মানুষেরা আজকাল নানা ধরনের বীজের দিকে ঝুঁকছেন। বাজারে বা সুপারশপে মিলছে চিয়া, ফ্ল্যাক্স বা তিসিসহ নানা রকমের বীজ। প্রতিদিন ওটস বা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে, কখনো সালাদে দিয়ে খেতে পারেন এসব বীজ।
অনেকের ধারণা, কিডনি রোগীরা বীজজাতীয় খাবার মোটেই গ্রহণ করতে পারবেন না। আসলে তা ঠিক নয়। যেমন চিয়া, তিসি, কুমড়ো বীজে পটাশিয়াম ও ফসফরাস অত বেশি থাকে না।
তবু কিডনির সমস্যা থাকলে খাবার আগে পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। আসুন জেনে নিই কোন বীজে রয়েছে কী উপকার।
প্রচুর ফাইবার এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ চিয়া বীজ স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের প্রিয় হয়ে উঠছে। এ ছাড়া এতে আছে প্রচুর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট পলিফেনল। প্রতি ২৮ গ্রাম চিয়া বীজে আপনি পাবেন ১০ গ্রামের বেশি ফাইবার, সাড়ে ৪ গ্রাম আমিষ, প্রায় ৫ গ্রাম ওমেগা ৩।
এ ছাড়া রয়েছে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও থায়ামিন। গবেষণা বলছে, চিয়া বীজ রক্তের শর্করা কমায়, উপকারী কোলেস্টেরল বাড়ায়। উচ্চ রক্তচাপ ও প্রদাহ কমায় চিয়া বীজ খাওয়ার অভ্যাস।
ফ্ল্যাক্স সিডকে বাংলায় বলে তিসি বীজ। আলফা লিনোলিক অ্যাসিডজাতীয় ওমেগা ৩-এর উৎস এই তিসির বীজ। আছে প্রচুর ফাইবারও। ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে ও মন্দ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এটি। উচ্চ রক্তচাপও কমায়।
এর মধ্যকার লিগন্যান নামের ফাইটোইস্ট্রোজেন নারীদের হট ফ্লাশ (হঠাৎ শরীর গরম হয়ে যাওয়া) কমায়। এ ছাড়া নারীদের স্তন ক্যানসার ও পুরুষের প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে বলে গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে।
তিল
তিল বা সিসেম সিড মূলত এশিয়ায় জনপ্রিয়। প্রচুর ফাইবার, প্রোটিন, ওমেগা ৬, কপার ও ম্যাঙ্গানিজের উৎস এই তিল। মেনোপজ হয়েছে এমন নারীরা প্রতিদিন ৫০ গ্রাম পরিমাণ তিল খেলে হট ফ্লাশ কমে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এটি অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে বাড়ায় ও হজমে সাহায্য করে। প্রদাহ, আর্থরাইটিস কমাতেও উপকারী।
কুমড়ো বীজ
পাম্পকিন বা কুমড়ো বীজ ফসফরাস ও ওমেগা ৬-এর উৎস। এর মধ্যকার ফাইটোস্টেরল কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। রক্তের বাড়তি ক্যালসিয়ামকে নিয়ন্ত্রণ করে কিডনি ও মূত্রথলির পাথরের ঝুঁকি কমায় এই বীজ। প্রস্রাব পরিষ্কার রাখা ও মূত্রথলি এবং প্রোস্টেটের সুস্বাস্থ্য রক্ষা করা এর কাজ।
সান ফ্লাওয়ার সিড বা সূর্যমুখীর বীজ হৃদ্যন্ত্রের জন্য উপকারী। এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। জিংক এ সেলেনিয়ামের ভালো উৎস বলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
এর মধ্যকার থায়ামিন ও সেলেনিয়াম বলবর্ধক। প্রতিদিন চার ভাগের এক কাপ শুকনা সূর্যমুখীর বীজ খেতে পারেন এসব উপকার পেতে।