গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে স্কুলগামী শিশুরা গরমের দিন সহজেই পানির ঘাটতি, ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি, পেটের অসুখ, টাইফয়েড, জন্ডিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।
শিশুদের জন্য স্কুলের নাশতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই বয়সের শিশুরা অনেকটা সময় স্কুলে কাটায়। সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় তাড়াহুড়া করে ঠিকমতো খেতে পারে না। তাই তাদের নাশতা হতে হবে সুষম। পুষ্টিবিদেরা মনে করেন, শিশুর মোট ক্যালরির এক-তৃতীয়াংশ চাহিদা স্কুল নাশতার মাধ্যমে পূরণ করা প্রয়োজন।
যেসব বিষয়ে লক্ষ রাখবেন
- নাশতায় প্রতিটি পুষ্টি উপাদানের উপস্থিতি থাকতে হবে। নাশতা যেন দ্রুত হজমে সহায়ক হয়। তাজা খাবার দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ঝোলজাতীয় ও ঠান্ডা হলে শক্ত হয়ে যায়, এমন খাবার কম দিতে হবে।
- নাশতায় রং, টেস্টিং সল্ট, কেনা বিস্কুটের গুঁড়া, অতিরিক্ত লবণ–চিনি এড়িয়ে চলুন। গরমে দ্রুত নষ্ট হতে পারে—এমন খাবার নাশতায় দেওয়া যাবে না। যেমন দুধ ও দুধজাতীয় কোনো খাবার, মেয়োনিজ, সালাদ ড্রেসিং, আধা সেদ্ধ খাবার, কাঁচা খাবার ইত্যাদি। এতে শিশু পেটের অসুখসহ আরও কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারে।
- বিশুদ্ধ পানির পাশাপাশি ডাবের পানি, লেবুপানি, কমলার শরবত বা মৌসুমি ফলের শরবত দেওয়া ভালো। শরবতে চিনির পরিবর্তে গুড় বা মিছরি দিন। এতে গ্লুকোজের চাহিদাও পূরণ হবে।
আদর্শ স্কুল নাশতার নমুনা
- লাল আটার রুটি+গাজরের বা পেঁপের হালুয়া+নাশপাতি বা আপেল।
- ভেজানো চিড়া বা খইয়ের সঙ্গে ড্রাই ফ্রুটস মিক্সড+ডিম সেদ্ধ+মিক্সড ফলের চাট।
- ছোলা-গাজর-মটরশুঁটি সেদ্ধ এক কাপ+শসা+ পেঁপের শরবত।
- বড় আলু সেদ্ধ দুটি+ডিম সেদ্ধ+শসা বা গাজর-আঙুর।
- কোনো ধরনের পিঠা+ফলের চাট।
- ফিশ ফিঙ্গার বা পনির+আলু সেদ্ধ একটি+আঙুর।
- চিকেন শর্মা একটি (আটার রুটির মধ্যে মুরগির মাংস দিয়ে মোড়ানো)+পেঁপের শরবত।
- সবজি ও মুরগির মাংস দিয়ে রান্না করা নুডলস+পেয়ারা+লেবু-পুদিনার শরবত।
- বোম্বে টোস্ট+পনির+ফলের সালাদ।
- মুড়ির সঙ্গে বাদাম-কিশমিশ-গুড় মিক্সড+টক-মিষ্টি ফলের চাট।
- সবজি খিচুড়ি+ডিম+পুদিনা-লেবুর শরবত।
- লাল আটার রুটি+ডিমভাজি+ফলের সালাদ।
- ডিম-আলুর চপ+কমলা বা পেয়ারা।
স্কুল নাশতায় বৈচিত্র্য আনুন। কারণ, প্রতিদিন একই ধরন ও স্বাদের খাবারের প্রতি বাচ্চাদের অনীহা তৈরি হতে পারে।
ফাহমিদা হাসেম, জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ, ল্যাবএইড ওয়েলনেস সেন্টার