পুরান ঢাকার দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতুর(বাবুবাজার ব্রিজ) বাবুবাজারে রাস্তা ও ফুটপাতের জায়গা দখল করে বসানো দোকান তুলে দেওয়া হয়েছে।
গত শনিবার ‘বাবুবাজারে শর্ত ভেঙে দোকান, মাসে তোলা হচ্ছে ৩০ লাখ টাকা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
গতকাল রোববার কর্তৃপক্ষ এসব দোকানপাট তুলে দিয়েছে।
বাবুবাজারে ফুটপাতের দোকান গুলো শর্ত ভেগে তৈরি হয়েছিল
ওই জায়গা ইজারা নেওয়ার শর্ত ছিল গাড়ি পার্কিং। আরও শর্ত ছিল, সেখানে হকার বসতে পারবেন না। তবে সেখানে দোকানপাট বসিয়ে বাণিজ্য করা হচ্ছিল।
অভিযোগ উঠেছিল, ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল মান্নানের ছত্রচ্ছায়ায় বসানো হয়েছিল দোকান।
দোকানপাট বসিয়ে ও পার্কিং থেকে মাসে কমবেশি ৩০ লাখ টাকা তুলছিলেন কাউন্সিলরের অনুসারীরা। এই টাকার ভাগ পাচ্ছিল পুলিশও।
প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদন মেয়র মহোদয়ের দৃষ্টিতে আসার পর তিনি সংস্থার প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তাকে জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে ও ইজারার শর্ত ভেঙে বসানো দোকানপাট সরাতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁরা নিজ উদ্যোগে দোকানপাট না সরালে সিটি করপোরেশন অভিযান চালিয়ে এসব গুঁড়িয়ে দেবে।
বাবুবাজার এলাকাটি পুরান ঢাকার কোতোয়ালি থানার আওতাধীন।
গতকাল রাতে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান মিয়া প্রথম আলোকে বলেন,
সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বিতভাবে তাঁরা এসব দোকানপাট উঠিয়ে দিয়েছেন।
আরেক পথচারী জাকির হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশনের শর্ত অনুসারে জায়গাটি যেন শুধু গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হয়।
সুশৃঙ্খলভাবে কাজটি হলে আর সমস্যা হবে না। ঢাকা দক্ষিণ সিটির সম্পত্তি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে,
বাবুবাজার ব্রিজের নিচে ২৮ হাজার বর্গফুট খোলা জায়গা গাড়ি পার্ক করতে এক বছরের জন্য ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়।
ইজারামূল্যের পাশাপাশি ভ্যাট বাবদ ১১ লাখ টাকা ও আয়কর বাবদ আরও ৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা করপোরেশনকে দিতে হয়েছে।
ইজারা নিয়েছেন বাবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির সম্পত্তি বিভাগ ও স্থানীয় দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাবুল হোসেনের নামে ইজারা নেওয়া হলেও বেশির ভাগ বিনিয়োগ কাউন্সিলরের।
কাউন্সিলরের ইশারাতেই মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে এসব বাণিজ্য করা হচ্ছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর ভাষ্য, দোকান, ভ্যান ও রিকশার গ্যারেজ, ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি ও মালামাল ওঠানো-নামানো—এসব খাতে দৈনিক সোয়া দুই লাখ টাকার মতো তোলা হতো বাবুবাজার সেতুর নিচ থেকে।
এর মধ্যে ইজারাদার তথা কাউন্সিলর নিজে রাখতেন প্রায় এক লাখ টাকা। বাকি টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে দিতেন।
টাকার ভাগ পুলিশকেও দেওয়া হতো।
উৎসঃ প্রথম আলো