হোমবাংলাদেশপাঠ্যপুস্তক কেমন হবে এবং কারা লিখবেন

People's interest in textbooks has increased manifold than in the past. For more than a decade, there have been various discussions and criticisms about the textbook. How the textbook will be written, who will write it, what should be the method of evaluation or review, what will be the punishment for mistakes in the textbook - this article is to initiate an academic discussion on these. Written by Nadeem Mahmud.

পাঠ্যপুস্তক কেমন হবে এবং কারা লিখবেন

পাঠ্যপুস্তক নিয়ে মানুষের আগ্রহ অতীতের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। এক দশকের বেশি সময় ধরে পাঠ্যপুস্তক নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।

কীভাবে পাঠ্যপুস্তক লেখা হবে, কারা লিখবেন, এর মূল্যায়ন বা রিভিউয়ের পদ্ধতি কেমন হওয়া উচিত, পাঠ্যপুস্তকের ভুলভ্রান্তিতে শাস্তির ব্যবস্থা কেমন হবে—এগুলো নিয়ে একাডেমিক আলোচনার সূত্রপাত করতে এই লেখা।

লিখেছেন নাদিম মাহমুদ

পাঠ্যপুস্তক কী

যাঁরা গবেষণায় যুক্ত থাকেন, তাঁরা মূলত কয়েক ধরনের একাডেমিক লেখালেখি করেন। মৌলিক গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল বিচার-বিশ্লেষণ শেষে সেগুলো প্রবন্ধ আকারে বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশের জন্য পাঠানো হয়।

সাময়িকীর সম্পাদক সে প্রবন্ধ বিশ্বের যেকোনো দেশে থাকা সেই বিষয়ের বিশেষজ্ঞের কাছে মূল্যায়নের জন্য পাঠাতে পারেন। এই মূল্যায়নকারী (রিভিউয়ার) কে বা কারা, লেখক বা গবেষককে জানানো হয় না।

মূল্যায়নকারীর মূল্যায়নের পর মূল লেখকের কাছে পাঠিয়ে প্রবন্ধটির কাজের সংযোজন-বিয়োজন ও চুলচেরা বিশ্লেষণ শেষে সাময়িকীতে প্রকাশযোগ্য করে তোলা হয়। এটাই যুগ যুগ ধরে একাডেমিক লেখা প্রকাশের প্রক্রিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গবেষণা প্রবন্ধের বাইরে নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর ওপর অতীতের বিভিন্ন গবেষণাকর্মের সারমর্ম নিয়ে গবেষকেরা সাময়িকীগুলোয় লেখালেখি করে থাকেন। এগুলোকে বলা হয় রিভিউ আর্টিকেল বা অবেক্ষণ প্রবন্ধ।

এসব রিভিউ আর্টিকেল পড়ে গবেষকেরা মূলত অতীতের কাজের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা পান। এর মধ্য দিয়ে নতুন নতুন গবেষণার ধারণা তৈরি করতে সুবিধা হয়।

গবেষণার মূল আর্টিকেল ও রিভিউ আর্টিকেল ছাড়াও একাডেমিশিয়ানরা বইও লেখেন। কখনো একটি পূর্ণাঙ্গ বই, আবার কখনো অন্য গবেষকদের নিয়ে কোনো নির্দিষ্ট অধ্যায় বা ‘বুকচ্যাপ্টার’ লেখা হয়।

নির্দিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ, অর্থাৎ যাঁরা ওই সব বিষয় নিয়েই গবেষণা করে আসছেন, তাঁরা মূলত এসব বই লেখেন। এর মধ্য দিয়ে অর্জিত জ্ঞানের একটি আধার তৈরি করা সম্ভব হয়। এসব বইকেই পরবর্তীকালে একাডেমিশিয়ান ও শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ব্যবহার করতে পারেন।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকাঠামো মূলত দাঁড়িয়ে থাকে চারটি স্তম্ভের ওপর

—শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষালয় ও পাঠ্যপুস্তক। একটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণিশিক্ষার উপকরণ হিসেবে সঠিক শব্দে, চিত্রে, অনুশীলনে যা লেখা হয়, তাকে মূলত পাঠ্যপুস্তক বা টেক্সট বুক বলা হয় (তথ্যসূত্র-১)।

পাঠ্যপুস্তকে সুনির্দিষ্ট বিষয়ে বেশ গোছালো তথ্যে সহজ ভাষায় মৌলিক বিষয়গুলোয় আলোকপাত করা হয়। এ ধরনের বই পড়ে শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনুশীলন ও প্রশ্ন করার মধ্য দিয়ে পাঠবোধগম্যতা যাচাইয়ের সুযোগ থাকে।

পাঠ্যপুস্তক সম্পর্কে ১৯৮২ সালে বিজ্ঞান সাময়িকীর ২৯৫ ভলিউমে বলা হয়েছে, পাঠ্যবইয়ের দুই মলাটে কিছু বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানকে ধরে রাখার সৎ প্রচেষ্টা থাকে, যার মধ্য দিয়ে নিশ্চিত করা হয় যে শিক্ষার্থীরা সেগুলো আয়ত্ত করতে পারছে (তথ্যসূত্র-২)।

পাঠ্যপুস্তক ও সাধারণ বইয়ের মধ্যে একটি মৌলিক পার্থক্য হলো, পাঠ্যবই কেবল শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে তৈরি হয়। পাঠ্যপুস্তক অধ্যয়নে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ হয়।

আর সাধারণ বই পাঠে দক্ষতা ও জানাশোনা বৃদ্ধি হয়। এ ধরনের বই যে কেউ পাঠ করতে পারে। মূলত কারিকুলাম কিংবা পরীক্ষাপদ্ধতির পরিবর্তন হলে নতুন আঙ্গিকে পাঠ্যপুস্তক লেখার প্রয়োজন হয়।

পাঠ্যপুস্তক কীভাবে লিখতে হবে

সারা বিশ্বেই পাঠ্যপুস্তক বা টেক্সট বুককে তথ্যসূত্রের বিশ্বস্ত মাধ্যম হিসেবে গণ্য করা হয়। পাঠ্যপুস্তকে যা থাকে, তাকে ভিত্তি ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মধ্যে সেই মৌলিক বিষয়গুলোর তথ্য সঞ্চারিত হয়। ফলে মৌলিক জ্ঞানের অভিন্নতা তৈরি হয়।

আর এই অভিন্ন জ্ঞানের আধার তৈরি করতে সারা বিশ্বেই পাঠ্যপুস্তকের তথ্যভান্ডার সমৃদ্ধ হয় মূলত গবেষকদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের আলোকে প্রকাশিত প্রবন্ধ বা আর্টিকেলগুলো ঘিরে।

যেসব বিষয় যুগ যুগ ধরে প্রতিষ্ঠিত, সেসব বিষয়ের ‘রিসোর্স’ আমরা অনায়াসে পেয়ে যেতে পারি। যেমন নিউটনের সূত্র, আইনস্টাইনের থিওরি, মেন্ডেলের বংশগতিবিদ্যার তথ্য—এগুলো অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত বিষয়।

তাই এসব বিষয় সহজবোধ্য ভাষায় শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করতে সমস্যা হয় না। তবে কিছু কিছু বিষয় নতুন হওয়ায় সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে লিখতে হয়।

পাঠ্যপুস্তক ‘পরোক্ষ’ বাক্যে লিখতে নেই, বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে শক্তিশালী মনোবল তৈরি করতে ‘প্রত্যক্ষবাক্যে পাঠ্যপুস্তক লেখার পরামর্শ থাকে।

পাঠ্যপুস্তকে ঠিক কোন কোন বিষয় থাকবে, তা নির্ধারণের জন্য শিক্ষাক্রম বা কারিকুলাম থাকে। সেই কারিকুলামের বিষয় সামনে রেখে পরিষ্কার ও সাবলীল ভাষায় লিখতে হয়। ঠিক কোন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বই লেখা হচ্ছে, তা মাথায় রাখতে হয়।

বয়সভেদে বোধগম্যতার পার্থক্য থাকায় বিষয়বস্তুগুলো সাজানো হয় সেই আলোকেই। ব্লগ, ওয়েবসাইট, উইকিপিডিয়া, কোচিং সেন্টার, কোম্পানির ওয়েবসাইট—কখনোই শক্তিশালী তথ্যের উৎস নয়।

এই অনির্ভরযোগ্য উৎসগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য একাডেমিয়ায় ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। মনগড়া কিংবা দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি করে, এমন তথ্য পাঠ্যপুস্তকে থাকা উচিত নয়।

পাঠ্যপুস্তক কারা লিখবেন

বিজ্ঞানবিষয়ক দার্শনিক পি ভি বেকন বলেছেন, একটি পাঠ্যপুস্তক যদি কেবল শ্রেণিকক্ষের জন্য প্রস্তুত করা হয়, তবে সেটি যেন অবশ্যই সতর্কতার সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা প্রস্তুত করা হয়।

শুধু বেকন নন, সারা বিশ্বেই পাঠ্যপুস্তক লেখার জন্য সাধারণত একাডেমিশিয়ানদের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়। যাঁরা জ্ঞান সৃষ্টি করেন, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সরাসরি গবেষণায় জড়িত, তাঁরা মূলত দীর্ঘকাল সুনির্দিষ্ট বিষয়ে কাজ করার ফলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ‘লব্ধ জ্ঞান’ রাখেন।

এই গবেষকেরা নির্দিষ্ট বিষয়ে অতীতে যেসব কাজ হয়েছে, সেই বিষয়ে যেমন, তেমনি নতুন কী কী গবেষণা হচ্ছে, সেসব সম্পর্কে ধারণা রাখেন। ফলে এসব অভিজ্ঞ মানুষ দিয়ে বই লেখালে ‘আপ টু ডেট’ তথ্যে পাঠ্যপুস্তক প্রস্তুত করা সম্ভব হয়।

মনে রাখতে হবে, সাধারণ বই লেখা আর পাঠ্যপুস্তক লেখার মধ্যে বিস্তর ফারাক আছে। পাঠ্যপুস্তক তাঁরাই লিখবেন, যাঁরা দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীদের পড়িয়ে আসছেন, ক্লাস নেওয়ায় পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।

পাঠ্যপুস্তকের লেখকেরা যেমন শিক্ষক বা গবেষক হতে পারেন, তেমনি তাঁরা কেবল শিক্ষার্থীদের শিক্ষক নন, বরং শিক্ষকদেরও শিক্ষক—তা মনে রাখতে হবে।

শিক্ষাক্রমের আলোকেই বস্তুনিষ্ঠ ও বিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির জায়গা থেকে পাঠ্যপুস্তক লেখার সময় একাডেমিশিয়ানদের সহায়তা নেওয়া তাই বাঞ্ছনীয়। তবে সেখানে রাষ্ট্রের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ও থাকতে পারে, যাতে রাষ্ট্রীয় নীতিমালা তৈরিতে সুবিধা হয় (তথ্যসূত্র-৩)।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের দৃষ্টিভঙ্গিকে অস্বীকার করে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয়ে দক্ষ নাগরিক গড়ার মূলনীতিও পাঠ্যপুস্তকে ঠাঁই পেতে পারে। তবে বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলোকে ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলার সুযোগ নেই।

তথ্যের উৎসের বাধ্যবাধকতা কতটুকু

পাঠ্যপুস্তক কোনো মৌলিক গবেষণা প্রবন্ধ নয়। এখানে যেসব তথ্য দেওয়া হয়, তা অতীতে প্রকাশিত গবেষণা, জরিপ কিংবা নির্ভরযোগ্য তথ্যের আলোকে গ্রন্থিত করা হয়।

যাঁরা বিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তক লেখেন, তাঁরা মূলত এই উৎসগুলোর আলোকেই লিখবেন। এটিই বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত নিয়ম। তবে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দেশে সেসব চর্চা ছিল না। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর পাঠ্যপুস্তকে এই ধারা দেখা গেছে।

সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে এসব সেকেলে চিন্তাভাবনার পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। প্লেজিয়ারিজম এড়াতে তথ্যের উৎসকে স্বীকার করা একাডেমিক সততার মধ্যে পড়ে।

এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, ইন্দোনেশিয়া বা মালয়েশিয়ার পাঠ্যপুস্তকে দেখা যায়, প্রতিটি পাতার নিচে অথবা বইয়ের শেষে নির্ঘণ্ট রাখা হয়েছে। গ্রাফিকসগুলো যদি অন্য উৎস থেকে নিয়ে ব্যবহার করা হয়, তবে সংশ্লিষ্ট উৎসের অনুমতি নেওয়া কিংবা সূত্র উল্লেখ করা হয়।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তথ্যের উৎস গোপন করার সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীদের নির্ভরযোগ্য তথ্য জানাতে উৎসের পাদটীকা দেওয়া লেখকদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। ডিজিটালাইজড সিস্টেমে অনেক শিক্ষার্থী ইলেকট্রনিক গেজেটে পড়াশোনা করছে।

ইলেকট্রিক ভার্সনের বইয়ের পাশাপাশি তথ্যের উৎসের হাইপারলিংক কিংবা কিউআর কোড–সংবলিত পাঠ্যপুস্তক প্রস্তুত করা এখন সময়ের দাবি।

কীভাবে পাঠ্যপুস্তক প্রকাশিত হবে

একটা সময় ছিল, যখন লেখকেরা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে পাঠ্যপুস্তক লিখতেন। এরপর প্রকাশক রাজি হলে সেটি ছাপাখানায় পাঠিয়ে দিতেন। সে রকম সময়ে পাঠ্যপুস্তকের মান নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা ছিল না।

কিন্তু বর্তমানে দেশের শিক্ষা ও কারিকুলাম দপ্তরের অধীন পাঠ্যপুস্তক বের হয়। তারাই মূলত সেই বইগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে আধুনিক সময় অনেক দেশেই লেখকেরা পাঠ্যপুস্তক লেখার পর তা সংশোধন (রিভিশন) শেষ করে মূল্যায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষক, গবেষক ও মনস্তত্ত্ববিদদের কাছে পাঠান।

বইগুলোর তথ্য যাচাই-বাছাই ও মূল্যায়ন, সংযোজন-বিয়োজনের সুপারিশ শেষে তা সম্পাদকের হাতে যায়। সম্পাদক সেগুলো দেখে প্রয়োজন অনুযায়ী সম্পাদনা করবেন, তথ্যের সঠিকতা জানবেন এবং চিত্রের প্রাসঙ্গিকতা নির্ণয় করবেন।

এরপর বানান সমন্বয়সহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে ছাপাখানায় পাঠাবেন। পুরো প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করবে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

পাঠ্যপুস্ত রচনায় অসততার প্রতিকার কী

প্রতিটি রাষ্ট্রের কাঠামোয় আইন ভাঙলে শাস্তি পাওয়ার রীতি থাকে। পাঠ্যপুস্তক লেখা অন্যান্য একাডেমিক কাজের মতো একটি ‘বড়’ ও ‘দায়িত্বপূর্ণ’ কাজ।

সে ক্ষেত্রে যদি অনৈতিক বিষয়, বিশেষ করে অন্যের মেধাস্বত্ব চুরি বা প্লেজিয়ারিজম কিংবা রাষ্ট্রের মূলনীতির পরিপন্থী বিষয় চলে আসে, তাহলে সেটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান থাকা বাঞ্ছনীয়।

মনে রাখতে হবে, পাঠ্যপুস্তকের ভুল আর দশটি ভুলের মতো নয়। এ বইগুলো কোটি কোটি শিক্ষার্থী পড়ে। ভুল হওয়ার পর ভুলের সংশোধনী দিলেও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় হয়।

এ ছাড়া বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে সামনের দিনগুলোয় এসব ভুলের ভয়াবহতা বাড়তে পারে। এসব বিষয় মাথায় রেখে সভ্য দেশগুলো পাঠ্যপুস্তকে অনিয়ম ও অনৈতিক চর্চাবিষয়ক আইন ও শাস্তির বিধান চালু রেখেছে। এতে জ্ঞান বিতরণের এই মহৎ বিষয় স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক থাকে।

পৃথিবীর বহু বিজ্ঞানী ও দার্শনিক বলেছেন, বিজ্ঞানকে জানতে হলে ধর্মকে জানতে হয়। আবার ধর্মকে পর্যালোচনা করতে বা জানতে হলে বিজ্ঞানের প্রয়োজন হতে পারে।

সেই জায়গা থেকে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে নিয়োজিত ব্যক্তিদের নির্মোহভাবে বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য শিক্ষার্থীদের জানাতে পারঙ্গম হতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপসকামী হলে সেই জ্ঞান আহরণের জায়গা থেকে ছিটকে পড়া অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে।

আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন, কল্পনাশক্তি জ্ঞানের চেয়ে মূল্যবান। জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, তবে কল্পনাশক্তি ব্যবহার করে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করা সম্ভব।

তাই পাঠ্যপুস্তকের কাজ হলো কল্পনাশক্তিকে শাণিত করা। আমাদের শিক্ষার্থীরাও এমন পাঠ্যপুস্তক পাবে—সেই প্রত্যাশা করি।

তথ্যসূত্র

১. Deighton et al., The Encyclopaedia of Education, Macmillan/Free Press, Vol. 9 (1971).

২. What makes a good textbook? Nature, Vol. 295, 1982.

৩. Michael et al., The Politics of the Textbook (1991).

  • নাদিম মাহমুদ গবেষক, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

উৎসঃ প্রথম আলো

সৌজন্যেপ্রথম আলো
প্রকাশনায়প্রথম আলো
রাসেল আকন্দ
রাসেল আকন্দhttps://grambangla.net
যদিও আমরা অনেক পিছিয়ে আছি পশ্চিমা সভ্যতার থেকে। তবে থেমে থাকছি না।
সম্পর্কিত আরো কিছু খবর

একটা কিছু লিখে জান

আপনার মতামত টি লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ

আপনার জন্য

error: Content is protected !!

Discover more from গ্রাম বাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading