মেডিকেলে ভর্তি ইচ্ছুকদের জন্য ৫ পরামর্শ
মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা হবে ৯ ফেব্রুয়ারি। অতএব প্রস্তুতির জন্য সময় আছে আর দেড় মাস। ঘরে বসে কীভাবে পরীক্ষার জন্য তৈরি হব? ভর্তি–ইচ্ছুকদের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ও চিকিৎসক মো. জুলকার নাঈম শাহরিয়ার
১. শরীর-মনের প্রস্তুতি
যেকোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হওয়ার অন্যতম প্রধান হাতিয়ার—সুস্থ দেহ, সুস্থ মন।
তাই পরিমিত ঘুম আর পর্যাপ্ত সুষম খাদ্য গ্রহণ খুব জরুরি। অবহেলার কারণে কোনোভাবেই অসুস্থ হওয়া যাবে না।
মনে রাখতে হবে, প্রস্তুতির এই সময়ে একটা দিন পিছিয়ে পড়লেও বড় ক্ষতি।
প্রতিদিনের রুটিনে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বহুনির্বাচনী প্রশ্নে (এমসিকিউ) পরীক্ষা দেওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
কারণ, মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষা সাধারণত সকাল ১০টায় শুরু হয়। এতে করে আপনার শরীর-মন পরীক্ষার জন্য তৈরি হয়ে যাবে।
২. মূল বইয়ের গুরুত্ব
বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির ক্ষেত্রে মূল বই-ই হতে পারে আপনার সঙ্গী। ভর্তি পরীক্ষার ধরন ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে।
তাই মূল বই পড়ে মূল ভাবনাটা মাথায় ভালো করে গেঁথে নিতে হবে।
জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যেমন গাজী আজমল ও মোহাম্মদ আবুল হাসান স্যারের বইয়ের পাশাপাশি মো. আবদুল আলীম স্যার ও মাজেদা বেগম ম্যাডামের বই থেকেও অতিরিক্ত তথ্যগুলো মাথায় রাখতে চেষ্টা করবেন।
রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞানের বইগুলো দাগ দিয়ে দিয়ে পড়তে পারলে ভালো।
বিভিন্ন ধরনের একক, মাত্রা সমীকরণ, পার্থক্য, শর্ত, উদাহরণ, সমীকরণ, সারণিগুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে এবং অনুশীলনী ও বোর্ডের এমসিকিউগুলোর সমাধান করতে হবে।
কোচিংয়ের দেওয়া সংক্ষিপ্ত বিষয়গুলো অন্ধের মতো মুখস্থ করা যাবে না। বুঝে পড়ে মনে রাখতে হবে।
৩. চর্চার বিকল্প নেই
প্রচুর পরীক্ষা দেওয়ার চর্চা করতে হবে। এবং এসব পরীক্ষাকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না।
বাসায় পরীক্ষা দিলেও পরীক্ষার মাঝখানে কারও সঙ্গে কথা বলবেন না। কারণ, পরীক্ষার উদ্দেশ্যই হলো নিজের সামর্থ্য যাচাই করা।
এই কাজে হেলাফেলা করা যাবে না। দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করে সেগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।
৪. সাধারণ জ্ঞান ও ইংরেজি
ভর্তি পরীক্ষায় তুরুপের তাস হচ্ছে সাধারণ জ্ঞান ও ইংরেজি। এই ২৫ নম্বরই আপনার ভাগ্য বদলে দিতে পারে।
যাঁরা এ বছর পরীক্ষা দিতে চাচ্ছেন, আজ থেকেই প্রতিদিন নিয়ম করে সাধারণ জ্ঞান ও ইংরেজিতে অন্তত এক ঘণ্টা সময় দেওয়ার চেষ্টা করুন।
যেকোনো বিষয় বারবার ‘রিভিশন’ দিতে হবে। এই রিভিশনও দুই রকম। প্রথমবার যেকোনো অধ্যায়ের যেকোনো পছন্দের বিষয় রিভিশন।
দ্বিতীয়বারে অপছন্দের, কিন্তু পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রিভিশন। দ্বিতীয়বারের রিভিশনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
যেকোনো রিভিশন শুরু করার আগে একটা সময় নির্ধারণ করে নিন। কতক্ষণের মধ্যে আপনি এই অধ্যায়ের রিভিশন শেষ করতে চান?
সময় নির্ধারণ করে সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করতে থাকুন। দেখবেন একদিনেই অনেকখানি পড়া হয়ে যাবে।
৫. সহজ বিষয় কঠিন যখন
কোনোভাবেই সহজ জিনিস ভুল করা যাবে না।
একটা সহজ প্রশ্নের ভুল উত্তর মানেই এক ধাক্কায় আপনার ক্রম কয়েক হাজারের পেছনে চলে যাবে।
দীর্ঘদিন মেডিকেল ভর্তি-ইচ্ছুকদের পড়ানোর অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সরকারি মেডিকেলে সুযোগ পাওয়ার জন্য খুব কঠিন প্রশ্নের উত্তর জানতে হয় না।
তাই মাথা ঠান্ডা রাখার কোনো বিকল্প নেই। ঘাবড়াবেন না। মনে রাখবেন, পরিশ্রমীরা কখনো হারে না।
উৎসওঃ প্রথম আলো
গ্রামবাংলা ফেসবুক পেজ
স্বাস্থ্য বিষয়ক আরো পড়তে এখানে ক্লিক করুন।