মোটরসাইকেল আর নছিমনের সংঘর্ষ ২ টি অকাল মৃত্যু। এভাবে হয় কিছু না বলা গল্পের ইতি, যা আমাদের কারোরই কাম্য নয়।
মোটরসাইকেল আর নছিমনের সংঘর্ষ
তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে ছয় বন্ধু গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঘুরতে বের হয়েছিলেন। তাঁরা প্রথমে মাদারীপুর সদর উপজেলার মঠেরবাজার এলাকার একটি দোকানে একসঙ্গে খিচুড়ি খান।
পরে সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বন্ধু প্রাণ হারান। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাদারীপুর-শরীয়তপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পখিরা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই বন্ধু হলেন রিফাত বালি (২০) ও মারুফ সরদার (২২)। রিফাত সদর উপজেলার বালিকান্দি এলাকার মোহাম্মদ আলী বালির ছেলে এবং মারুফ পাশের মৃধার মোড় এলাকার মোক্তার সরদারের ছেলে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মারুফ, রিফাতসহ ছয় বন্ধু গতকাল রাতে ঘোরাঘুরি শেষে তিনটি মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন।
তাঁদের মোটরসাইকেল তিনটি মাদারীপুর-শরীয়তপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পখিরা এলাকায় এলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি নছিমনের সঙ্গে মারুফের মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়।
এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মারুফ।
গুরুতর আহত অবস্থায় মারুফের বন্ধু রিফাতকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী রাসেল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, মোটরসাইকেল আর নছিমন যান দুটি দুই দিক থেকে দ্রুতগতিতে চলছিল।
মোটরসাইকেল আরোহী কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। নছিমনের হেডলাইট ছিল না। দুই যানের সংঘর্ষের পর নছিমনের নিচে চলে যান মোটরসাইকেলের দুই আরোহী। এই অবস্থায়ও নছিমনটি চলতে থাকে।
নিহত দুজনের বন্ধু তুহিন সরদার বলেন, ‘একসঙ্গে বসে খেলাম। তারপর বন্ধুরা মিলে মজা করতে করতে বাড়ির দিকে ফিরছিলাম। হঠাৎ দুর্ঘটনায় কী থেকে কী হয়ে গেল!’
নিহত মারুফের বাবা মোক্তার হোসেন আহাজারি করতে করতে বলেন, ‘বাজানরে হুন্ডা (মোটরসাইকেল) চালাইতে বারবার না কইছি। কথা শোনে নাই। হায় আল্লাহ, এ আমার কী হইল! আমার বাজান মরতে পারে না।’
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল। এই দলের স্টেশন কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে সড়কে পা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পড়ে থাকা এক মোটরসাইকেল আরোহীর লাশ উদ্ধার করি।
এর কিছুটা দূরে মোটরসাইকেলটি পড়ে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত গতির কারণে এই দুর্ঘটনায় দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে।’
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম সালাউদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত দুই মোটরসাইকেল আরোহীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
আইনিপ্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। চালক নছিমনটি রেখে পালিয়ে গেছেন।
উৎসঃ প্রথম আলো