হোম বাংলাদেশ দুর্ঘটনা চিকিৎসক স্ত্রী ও নিজের গায়ে আগুন দিয়ে মারা গেলেন স্বামী

চিকিৎসক স্ত্রী ও নিজের গায়ে আগুন দিয়ে মারা গেলেন স্বামী

0
স্ত্রী ও নিজের গায়ে আগুন

রায়পুরায় নারী চিকিৎসক ও নিজের গায়ে আগুন দিয়ে মারা গেলেন সাবেক স্বামী।

নরসিংদীর রায়পুরায় মো. খলিলুর রহমান (৩৫) এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাবেক স্ত্রী ও নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার বেলা পৌনে একটার দিকে উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের ব্রাহ্মণের টেক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্ত্রী ও নিজের গায়ে আগুন

খলিলুর রহমান আজ সোমবার দুপুরের দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। অন্যদিকে ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া শরীর নিয়ে দগ্ধ তাঁর সাবেক স্ত্রী রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

দগ্ধ নারীর নাম লতা আক্তার (২৭)। তিনি ব্রাহ্মণের টেক গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের মেয়ে। লতা পেশায় চিকিৎসক। তিনি রাজধানীর শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত। মারা যাওয়া খলিলুর রহমানের বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়া এলাকায়।

দগ্ধ লতার পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, বিবাহবিচ্ছেদ করার রাগে-ক্ষোভে লতাকে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার পর নিজের গায়েও আগুন দিয়েছেন খলিলুর রহমান। তবে খলিলুরের স্বজনেরা হত্যার অভিযোগ নাকচ করে বলেন, বাগ্‌বিতণ্ডার মধ্যে খলিলুর ও লতা নিজেরাই নিজেদের শরীরে আগুন ধরিয়েছেন।

দগ্ধ চিকিৎসক লতা বর্তমানে বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলছেন চিকিৎসকেরা।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,

দুই বছর আগে খলিলুর রহমানকে বিয়ে করেন লতা। তবে বিয়ের আগে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সম্পর্ক করার অভিযোগে লতা গত পাঁচ মাস আগে খলিলুরকে তালাক দেন। সেই থেকে লতা তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণের টেকে থাকছিলেন।

গতকাল দুপুরে খলিলুর ব্রাহ্মণের টেক গ্রামে লতার বাড়িতে যান। ঘরে ঢুকেই তিনি দরজা বন্ধ করে দেন। পরে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সঙ্গে করে নিয়ে আসা পেট্রল লতা ও নিজের শরীরে ঢেলে দেন তিনি। তাঁদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে দরজা ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করেন।

পরিবারের সদস্যরা আগুন নিভিয়ে লতাকে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেন। সেখানকার জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান।

অন্যদিকে স্থানীয় লোকজন খলিলুরকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আজ দুপুরে খলিলুর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান জানান, ‘গতকাল বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে লতা নামের একজন নারী চিকিৎসককে দগ্ধ অবস্থায় আমাদের হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।’

দগ্ধ লতার চাচা ফারুক উদ্দিন বলেন,

সাবেক স্বামী খলিলুর বাড়িতে এসে লতার শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক তাঁদের জানিয়েছেন, লতার শরীরের ৮০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

লতা বর্তমানে বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলছেন চিকিৎসকেরা।

মারা যাওয়া খলিলুরের ভাই মফিজুর রহমান বলেন, ‘বাগ্‌বিতণ্ডা ও কথা-কাটাকাটির মধ্যে উত্তেজিত হয়ে খলিলুর ও লতা নিজেরাই নিজেদের শরীরে আগুন ধরিয়েছে। আমার ভাইয়ের এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।’

রায়পুরা থানার ওসি সাফায়েত হোসেন জানান, লতার শরীরে আগুন ধরানোর পর নিজের শরীরেও খলিলুর আগুন দেন বলে জেনেছেন। খলিলুর মারা গেছেন।

তাঁর লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া দগ্ধ লতার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

উৎসঃ প্রথম আলো

প্রকাশনায়ঃ প্রথম আলো

মতামত নাই

একটা কিছু লিখে জান

আপনার মতামত টি লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

error: Content is protected !!

Discover more from গ্রাম বাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Exit mobile version