মা ও মেয়ে খুন – কোথায় গিয়ে দাঁড়াল এই সমাজ
হায়রে মানবজাতি, মা ও মেয়ে খুন হচ্ছে তাও আবার একই সাথে?
রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় মাহমুদা হক (৩৩) নামের এক মা ও তাঁর ১০ বছর বয়সী মেয়ে সানজা মারোয়াকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ মাহমুদার স্বামী এস এম সেলিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বৃষ্টির পরিবারের অভিযোগ, মাহমুদা ও সানজাকে হত্যা করা হয়েছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, এস এম সেলিমের পৈতৃক বাড়ি মেরুল বাড্ডায়।
সেখানেই মাহমুদা তাঁদের দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন। সেলিম বর্তমানে বেকার। সানজা মেরুল বাড্ডায় একটি মাদ্রাসায় পড়ত।
মাহমুদার মামা রাসেল সিকদার আজ বুধবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত দেড়টার দিকে ফোনে বৃষ্টির অসুস্থতার কথা জানতে পারেন।
পরে তাঁরা মেরুল বাড্ডায় মাহমুদার বাসায় গিয়ে তাঁকে ও তাঁর মেয়ে সানজাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।
মাহমুদার আট মাস বয়সী শিশুটি খাটে শুয়ে ছিল।
পরে তিনি ও সেলিম মিলে বৃষ্টি ও সানজাকে অচেতন অবস্থায় স্থানীয় বেসরকারি ফরায়েজি হাসপাতালে নিয়ে যান।
এরই মধ্যে খবর পেয়ে বাড্ডা থানার পুলিশ ওই হাসপাতালে যায়।
বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাদেক মিয়া আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, চিকিৎসকেরা দ্রুত মা ও মেয়েকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।
মা ও মেয়েকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সকাল সোয়া ছয়টার দিকে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় জিজ্ঞাসাদের জন্য হাসপাতাল থেকে মাহমুদার স্বামী সেলিমকে আটক করা হয়।
সেলিমের দাবি, বৃষ্টি নিজে কিছু খেয়েছেন এবং পরে মেয়েকে কিছু খাইয়ে হত্যা করেছেন।
তদন্ত করে এবং ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ধারণ করা যাবে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
তবে মাহমুদার মামা রাসেল শিকদার অভিযোগ করেন, সেলিমের অন্য নারীর সম্পর্ক আছে।
এ নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি হলে সেলিম বৃষ্টিকে মারধর করতেন।
সেলিমই বৃষ্টিকে কিছু খাইয়ে অথবা শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন। মেয়ে তা দেখে ফেলায় তাকেও হত্যা করেছেন।
গরুর দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলেন সেলিম
মাহমুদা হক ওরফে বৃষ্টি প্রতিদিনই ঘুমানোর আগে গরুর দুধ পান করতেন। আর সেটাকেই সুযোগ হিসেবে বেছে নেন মাহমুদার স্বামী সেলিম।
মঙ্গলবার রাতে সেলিম ঘুমের ৩০টি বড়ি এনে দুধের পাত্রে পুরো দুধের সঙ্গে মিশিয়ে দেন। এরপর যথারীতি মাহমুদা সেই দুধ পান করেন।
এমনকি তাঁদের ১০ বছর বয়সী মেয়ে সানজা মারোয়াও দুধ পান করে। এরপর দুজনেই নিস্তেজ হয়ে পড়েন। তাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। বুধবার সকালে তাঁরা মারা যান।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় এ ঘটনা ঘটে।
স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যায় গ্রেপ্তার এস এম সেলিম জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে এসব তথ্য জানিয়েছেন বলে জানান বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ।
বুধবার হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সেলিমকে।
সেলিমের পৈতৃক বাড়ি মেরুল বাড্ডায়। সেখানেই মাহমুদা তাঁদের দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন। সেলিম বর্তমানে বেকার।
সানজা মেরুল বাড্ডায় একটি মাদ্রাসায় পড়ত।
এ ঘটনায় মাহমুদার বাবা মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে সেলিমকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।
বাড্ডা থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বুধবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন,
জিজ্ঞাসাবাদে সেলিম পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বনিবনা ছিল না।
দুজনই পরস্পরকে অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক আছে, এমন সন্দেহ করে ঝগড়া করতেন।
এর জেরে স্ত্রী মাহমুদাকে হত্যার সুযোগ খুঁজতে থাকেন সেলিম।
মঙ্গলবার রাতে তিনি গরুর দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। মাহমুদা সেই দুধ পান করেন।
স্ত্রীকে হত্যার ইচ্ছা থাকলেও মেয়েও এ দুধ খাবে, এমনটা তাঁর ধারণাতেই ছিল না।
পরে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়া স্ত্রী ও মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন।
বুধবার সকালে মাহমুদার মামা রাসেল সিকদার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম আলোকে বলেছিলেন,
মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে ফোনে মাহমুদার অসুস্থতার কথা জানতে পারেন।
পরে তাঁরা মেরুল বাড্ডায় মাহমুদার বাসায় গিয়ে মা–মেয়েকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। মাহমুদার আট মাস বয়সী শিশুটি খাটে শুয়ে ছিল।
পরে তিনি ও সেলিম মিলে মা–মেয়েকে অচেতন অবস্থায় স্থানীয় বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে যান।
বেশি বেশি পড়ুন আর স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে জানুন
এরই মধ্যে খবর পেয়ে বাড্ডা থানার পুলিশ ওই হাসপাতালে যায়।
মাহমুদার ছোট বোন মারিয়া হক প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে সেলিম তাঁকে ফোন করে বলেন মাহমুদা ও সানজা নড়াচড়া করছে না।
কারও শ্বাসপ্রশ্বাস নেই। তাঁদের শরীর শীতল হয়ে গেছে।
বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক সাদেক মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, মা ও মেয়েকে প্রথমে মেরুল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখানকার চিকিৎসকেরা দ্রুত দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।
মা ও মেয়েকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সকাল সোয়া ছয়টার দিকে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাদের জন্য মেরুল হাসপাতাল থেকে সেলিমকে আটক করা হয়।