হোম বাংলাদেশ অপরাধ ভিন্নমত দমনের জন্য সাইবার নিরাপত্তা আইন

ভিন্নমত দমনের জন্য সাইবার নিরাপত্তা আইন

The Digital Security Act actually stands as the Cyber Security Act. This law was not made to protect the safety and rights of citizens, but to suppress political dissent.

0
সাইবার নিরাপত্তা আইন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আসলে সাইবার নিরাপত্তা আইন নামে বহাল রয়েছে। এই আইন নাগরিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার সুরক্ষার জন্য নয়, বরং রাজনৈতিক ভিন্নমত দমনের জন্য করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে এক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে কয়েকজন রাজনীতিক এসব কথা বলেন।

সাইবার নিরাপত্তা আইন

ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনার মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়।

কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রকারান্তরে ডিজিটাল আইন হিসেবে বহাল রয়েছে বলে মনে করেন ওয়েবিনারে অংশ নেওয়া এই রাজনীতিকেরা। তবে একজন রাজনীতিক ভিন্নমত পোষণ করেন।

‘ডিজিটাল থেকে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট: কী ভাবছেন রাজনীতিকেরা?’ শীর্ষক এই ওয়েবিনারের আয়োজন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।

 ‘ডিজিটাল থেকে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট: কী ভাবছেন রাজনীতিকেরা?’ শীর্ষক ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা
‘ডিজিটাল থেকে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট: কী ভাবছেন রাজনীতিকেরা?’ শীর্ষক ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা| ছবি: সংগৃহীত

বলা হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আসলে সাইবার নিরাপত্তা আইন নামে বহাল রয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

ওয়েবিনারে তিনি বলেন, এই আইনের ভিত্তি হলো ভয়, সাংবাদিক ও বোদ্ধা মহল যা বলতে চায়, সে কথা যাতে যথাযথভাবে বলতে না পারে। সরকার যে কাজ করে ও ভাবে, তার বাইরে কথা বলতে গেলে তার বিরুদ্ধে কতগুলো খড়্গ নেমে আসবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগই অপপ্রয়োগ। এটা কোনো আইন নয়। মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া, একটা জবরদস্তিমূলক শাসন কায়েমের জন্য এই আইন করা হয়েছে।

সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেন,

সাইবার নিরাপত্তা আইনটি মূলত করা হয়েছে প্রতিপক্ষের মনে ভয় সৃষ্টির জন্য। নিজেদের যে শক্তিমত্তা, তা প্রদর্শনের জন্য। এখানে কোনো সৎ উদ্দেশ্য নেই।

এখানে কেবল শাসকগোষ্ঠী ও তাদের কিছু লোকজনের অপকর্ম ঢেকে রাখা, তাদের ব্যাপারে কথা না বলা, তাদের যে দুর্বলতা-অক্ষমতা আছে, সেগুলো যেন জনসমক্ষে প্রকাশ হয়ে না যায়, সে জন্য আইনটি করা হয়েছে।

তবে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মনে করেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনটি জনস্বার্থে করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের কাছে নাগরিকদের আবেদন থাকে, তাদের যেন শতভাগ নিরাপত্তা দেওয়া হয়।

সরকার শুধু সেই চেষ্টা করার জন্য আইনটি প্রণয়ন করেছে, কোনো সাংবাদিক বা রাজনীতিককে কষ্ট দেওয়ার জন্য নয়। যারা অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে দেশের অপরাধপ্রবণতা দূর করার জন্যই এই আইন করা হয়েছে।

ওয়েবিনারের শুরুতে সঞ্চালক ও সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান বলেন, সিজিএস ২০২০ সাল থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনের মামলাগুলো পর্যবেক্ষণ করছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আইনের অধীনে সবচেয়ে বেশি অভিযুক্ত হয়েছেন রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকেরা।

একইভাবে নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীনে ১৮টি মামলা হয়েছে, যেখানে ১০ জন সাংবাদিক ও ৮ জন রাজনীতিবিদ অভিযুক্ত হয়েছেন।

জিল্লুর রহমান বলেন, ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন— উভয়কেই ব্যবহার করা হয়েছে।

সব আইন জনকল্যাণমূলক নয় বলে মন্তব্য করেন সিজিএসের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী। ওয়েবিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার হ্যাক করে শত শত কোটি টাকা নিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় সাইবার অপরাধ। অথচ এ ঘটনায় একজনও গ্রেপ্তার হয়নি।

সাইবার নিরাপত্তা আইনের অনেক ধারা জামিন অযোগ্য বলে উল্লেখ করেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। তিনি বলেন, এই আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে। স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ অনেকখানি রুদ্ধ হয়েছে। সাংবাদিকেরা ভয় পাচ্ছেন।

তা ছাড়া এই আইনের বেশির ভাগ মামলাই হয়েছে ভিন্নমত ও বিরোধীদের কেন্দ্র করে। নাগরিকদের অধিকার, সাইবার পরিসর, অনলাইন ও ডেটাকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এই আইন হয়নি। রাজনৈতিক ভিন্নমত, সরকারবিরোধীদের দমন করার জন্য আইনটি করা হয়েছে।

উৎসঃ প্রথম আলো

মতামত নাই

একটা কিছু লিখে জান

আপনার মতামত টি লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

error: Content is protected !!

Discover more from গ্রাম বাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Exit mobile version